অনলাইন ডেস্ক: প্রথমবারের মতো মিশরের প্রশাসনিক বিচারিক আদালত স্ট্রেট কাউন্সিলের বিচারক হিসেবে শপথ নিয়েছেন ৯৮ জন নারী। মিশরে এতোদিন পর্যন্ত সামগ্রিকভাবে ১৬ হাজারের বেশি বিচারকের মধ্যে নারী বিচারকের সংখ্যা কখনও ৬৬ পেরোয়নি। অর্থাৎ, দেশটিতে মোট বিচারকের মাত্র ০.৫ শতাংশ ছিল নারী। আর এখন ৯৮ জন নারী বিচারকের নিয়োগপ্রাপ্তির প্রশংসা করে মিশরের ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর ওমেন (এনসিডব্লিউ) বলেছে, এ পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে নারীর আরও ক্ষমতায়ন করার জন্য দেশের নেতৃবৃন্দের রাজনৈতিক সদিচ্ছারই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। বার্তা সংস্থা এপি জানায়, মঙ্গলবার রাজধানী কায়রোতে প্রধান বিচারপতি মোহাম্মদ হোসাম আল দীনের কাছে ৯৮ জন নারী বিচারক হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন।
প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি নারীদের স্ট্রেট কাউন্সিল ও পাবলিক প্রসিকিউশনে যোগদানের আহ্বান জানানোর কয়েক মাসের মধ্যে তারা শপথ গ্রহণ করেন। এর আগে বিচার বিভাগে পুরুষদের একচেটিয়া আধিপত্য ছিল।নতুন বিচারকদের স্বাগত জানিয়ে হোসাম আল দীন বলেন, ‘তারা স্ট্রেট কাউন্সিলে গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন।’কয়েকজন নারী বিচারক তাদের প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, অবশেষে তাদের স্বপ্ন সত্যি হওয়ায় খুব খুশি। বিচারক হিসেবে শপথ নেওয়া রাদয়া হেলমি বলেন, ‘এটি আমাদের ও আগের প্রজন্মের জন্য একটি স্বপ্ন পূরণের দিন।’
তিনি আরও বলেন, ‘মিশর ও আরব বিশ্বের দেশগুলোতে বিচার ব্যবস্থার অন্যতম সদস্য হওয়া তার স্বপ্ন ছিল।গত মার্চ মাসে নারী বিচারক নিয়োগের বিষয়ে এল সিসির সিদ্ধান্তকে প্রশংসা করেন নারী অধিকার কর্মীরা। মিশরের ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর উইমেন সে সময় জানায়, এই পদক্ষেপ নারীদের আরও বেশি রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের ইচ্ছার প্রতিনিধিত্ব করবে।উল্লেখ্য, ১৯৪৬ সালে যাত্রা শুরুর পর থেকে স্টেট কাউন্সিলে শুধু পুরুষরাই নিয়োগ পেয়ে এসেছেন, এমনকী এখন পর্যন্ত সেখানে নারী আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়ে এসেছে। গত কয়েক বছরে নারীরা স্টেট কাউন্সিলের এই অবস্থানের বিরোধিতা করেছেন। নারীরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগও করেছেন তারা।
মিশরের প্রেসিডেন্ট আব্দুল ফাত্তাহ আল সিসি গত মার্চে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন উপলক্ষে স্টেট কাউন্সিল এবং পাবলিক প্রসিকিউশনে নারী বিচারকের নিয়োগ অনুমোদন করতে আইন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন।নারী অধিকারকর্মীরা তখন প্রেসিডেন্টের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। এরপর গত জুনে মিশরের বিচারিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সর্বোচ্চ পরিষদ এক বৈঠকে নারী নিয়োগের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে।ঘোষণায় বলা হয়েছিল, এ বছর অক্টোবর থেকে মিশরীয় নারীরা প্রথম স্টেট কাউন্সিল এবং পাবলিক প্রসিকিউশনে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন।